রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তি দেখে অনেকেই দুশ্চিন্তায় খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেন। আবার কেউ ভাবেন, শরীর ও হাড়ে ব্যথার কারণ এই ইউরিক অ্যাসিড। এ সমস্যার জন্য বাতরোগ হয় বলেও ধারণা আছে অনেকের। আসলে ইউরিক অ্যাসিড সম্পর্কে আমাদের অনেক ভ্রান্ত ধারণা আছে। সঠিক তথ্য কী, চলুন জেনে নিই:
ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে কেন?
রক্তের ইউরিক অ্যাসিডের তিন ভাগের এক ভাগ আসে খাবার থেকে, দুই ভাগ দেহের পিউরিন নামের পদার্থ ভেঙে তৈরি হয়। যদি কোনো কারণে এই ইউরিক অ্যাসিড তৈরির প্রক্রিয়ায় গোলমাল হয় বা কিডনি দিয়ে কম বের হয়, রক্তে এর মাত্রা বেড়ে যায়।
ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে কী হবে?
দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের ক্ষেত্রে এই বাড়তি ইউরিক অ্যাসিড শরীরের কোনো ক্ষতি করে না। তাই দুশ্চিন্তার কারণ নেই। কখনো বাড়তি ইউরিক অ্যাসিড ক্রিস্টাল তৈরি করে গিরায় প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। তখন ওই গিরায় তীব্র ব্যথা করে, লাল হয়ে ফুলে যায়। একে তখন গাউট বা গেঁটে বাত বলে। এটা কিডনিতে পাথরও তৈরি করতে পারে। শুরুতে গাউটে একটি মাত্র গিরা (বিশেষ করে, পায়ের বুড়ো আঙুল) আক্রান্ত হয়। একবার এই তীব্র আক্রমণের পর অনেক দিন আর কোনো (দ্বিতীয় দফায়) আক্রমণ হয় না।
কী কী খাওয়া নিষেধ?
অনেকে মাছ-মাংস, ডাল, বীজ, কিছু সবজি পুরোপুরি ছেড়ে দেন। আসলে খাবারে তেমন কোনো নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন নেই। অতিরিক্ত পিউরিনযুক্ত খাবার, যেমন লাল মাংস, কলিজা, লাল মদ, সামুদ্রিক মাছ কম খেতে হবে।
ওষুধ কখন খাবেন?
উপসর্গ না থাকলে কেবল বাড়তি ইউরিক অ্যাসিডের জন্য কোনো ওষুধের প্রয়োজন নেই। নারীদের ১৩ ও পুরুষদের ১১ মিলিগ্রাম/লিটারের বেশি ইউরিক অ্যাসিড থাকলে চিকিৎসা নিতে হবে। এ ছাড়া বছরে একাধিকবার গাউটের আক্রমণ, কিডনিতে পাথর, গিরা নষ্ট হওয়া, কিডনির অকার্যকারিতার চিকিৎসা লাগবে। সাময়িক নয়, সাধারণত সারা জীবনই চিকিৎসা নিতে হয়। তাই নিশ্চিত না হয়ে ওষুধ শুরু করবেন না।
ডা. রওশন আরা
মেডিসিন ও বাতরোগ বিশেষজ্ঞ
গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
Discover more from Health Bangla
Subscribe to get the latest posts sent to your email.