এন্ডোমেট্রিওসিস মোটামুটি পরিচিত এক সমস্যা। অনেক নারীর এই সমস্যায় খুব কষ্ট পায়। আমাদের দেশের বেশিরভাগ নারী চাপা স্বভাবের। ছোটখাট সমস্যা হলে কাউকে বলতে চায় না। এমনকি স্বামীকেও বলতে দ্বিধা বোধ করে। কিন্তু এন্ডামেট্রিওসিস হলে তলপেটে এত অসহ্য ব্যথা হয় যে কাউকে না বলে পারা যায় না।
এ অসুখ হলে মাসিকের সময় নারীদের প্রচন্ড কষ্ট হয়। নারীদের ইউটেরাস বা জরায়ুতে তিনটি স্তর থাকে। সবচেয়ে ভেতরের স্তরের নাম এন্ডোমেট্রিয়াম। এই এন্ডোমেট্রিয়াল কোষ যখন অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে জরায়ুর বাইরে অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়ে তখন তাকে এন্ডোমেট্রিওসিস বলে।
বাচ্চা হচ্ছে না? এন্ডোমেট্রিওসিস এ ভুগছেন নাতো?
সাধারণত : ওভারি, ফেলোপিয়ান টিউব, পেটের মধ্যে, স্কার টিস্যুতে এই এন্ডোমেট্রিয়াল কোষগুলো ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত : যেসব নারীরা সন্তান জন্ম দেওয়ার বয়সের মধ্যে (অর্থাৎ ১৮ থেকে ৪৫ বছর) পড়েন তাদের এন্ডোমেট্রিওসিস দেখা যায়।
এই রোগের লক্ষণসমূহ : অনিয়মিত মাসিক, মাসিকের সময় তীব্র ব্যথা অনেক সময় এত ব্যথা হয় যে রোগী চিৎকার করতে থাকে এবং সহবাসের সময়ও ব্যথা হয়, মলমূত্র ত্যাগ করার সময় ব্যথা, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য, ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্ব, প্রস্রাবের সাথে রক্ত পড়া ইত্যাদি।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা : শুধু লক্ষণ শুনে এবং শারীরিক পরীক্ষা করে নিশ্চিত ভাবে রোগটি ডায়াগনসিস সম্ভব নয়। আল্ট্রাসনোগ্রাফি করলে রোগটি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তবে শতভাগ নিশ্চিত হবার জন্য ল্যাপারোস্কোপি করে বায়োপসির মাধ্যমে রোগটি ধরা যায়।
চিকিৎসা : এন্ডোমেট্রিওসিসের চিকিত্সা হয় অপারেশন বা ওষুধের মাধ্যমে। পেটের ব্যথা কমানোর জন্য NSAIDs ব্যবহার করা হয়। গোনাডোট্রপিন এনালগ ব্যবহার করে ভাল ফল পাওয়া গেছে। এছাড়া OCP এবং প্রজেস্টিনের সাহায্যের চিকিত্সা করা হয়। ওষুধে কাজ না হলে সার্জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এন্ডোমেট্রিওসিস যেহেতু বন্ধ্যাত্বের জন্য দায়ী তাই যাদের এন্ডোমেট্রিওসিসের সমস্যা আছে তাদের তাড়াতাড়ি বাচ্চা নেওয়া উচিত।
লেখক :
ডা. মো. ফজলুল কবির পাভেল
মেডিসিন বিভাগ
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল
Discover more from Health Bangla
Subscribe to get the latest posts sent to your email.