lemon

লেবুর খোসা কেন খাবেন?

অনেকে কেই দেখা যায় লেবুর খোসা খাচ্ছেন। অনেকে ভাবেন ক্ষুদার যন্ত্রণায় বুঝি তিনি লেবুর খোসা খাচ্ছেন। অনেকে রুচি বাড়ানোর জন্য অথবা বদহজম দূর করতে লেবুর খোসা খান। কিন্তু আসলেই লেবুর খোসা কি কোন উপকার করে?

লেবুতে থাকা পটাসিয়াম ও ভিটামিন সি শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে লেবু। আমরা বেশিরভাগ সময়ই লেবু খেয়ে খোসা ফেলে দিই। তবে জানেন কি লেবুর মতো এর খোসাও শরীরের জন্য উপকারী?

lemon

জেনে নিন লেবুর খোসা কি উপকারে লাগে-
গবেষণা মতে, লেবুর রস অত্যন্ত উপকারী। তবে লেবু খোসাসহ খেলে উপকার হয় দ্বিগুণ।
লেবুর খোসা থেকে ভিটামিন এ, ই, সি, বি৬, রিবোফ্লাভিন, ফসফরাস, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়।

লেবুর খোসা পরিষ্কার করে ফ্রিজে রেখে খেতে পারেন।
স্যুপ, সালাদ অথবা পাস্তার সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন লেবুর খোসা।
ফ্রিজে রাখা লেবুর খোসা কুচি করে চা, জুস অথবা স্মুদির সঙ্গে মিসিয়েও পান করা যায়।
লেবুর খোসা শুকিয়ে গুঁড়া করে ব্যবহার করা যায় রূপচর্চায়ও।

লেবু খেলে যতটা শারীরিক উপকার পাওয়া যায়, তার থেকে অনেক বেশি পাওয়া যায় লেবুর খোসাটা খেলে। আসলে বেশ কিছু পরীক্ষার পর এ কথা পানির মতো পরিষ্কার হয়ে গেছে যে লেবুতে যে পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে, তার থেকে প্রায় ৫-১০ গুণ বেশি রয়েছে লেবুর খোসায়। সেই সঙ্গে মজুত রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, ফলেট, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম, যা নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে। যেমন ধরুন-

রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, লেবুতে উপস্থিত ডায়াটারি ফাইবার এবং ভিটামিন সি শরীরে প্রবেশ করলে দেহের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে ছোট-বড় কোনো রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে সংক্রমণের মতো রোগও দূরে থাকতে বাধ্য হয়। ঠান্ডা, ফ্লু এবং গলার ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে।

কিডনি স্টোনের মতো রোগ দূরে থাকে

গবেষণায় এমনটা দেখা গেছে, নিয়মিত লেবুর খোসা খাওয়া শুরু করলে শরীরে সিট্রিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। যার প্রভাবে কিডনিতে স্টোন হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে থাকে না বললেই চলে। তাই এমন ধরনের রোগের খপ্পরে পরতে না চাইলে নিয়মিত লেবুর খোসা খেতে ভুলবেন না যেন!

কনস্টিপেশনের মতো রোগের প্রকোপ কমে

লেবুর খোসায় উপস্থিত ডায়াটারি ফাইবার শরীরে প্রবেশ করা মাত্র এমন কিছু খেল দেখায় যে কনস্টিপেশনের মতো রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে আলসার এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যাও কমে যায়। তাই প্রতিদিন সকালেই যাদের মল ত্যাগ করতে গিয়ে কষ্ট সহ্য করতে হয়, তাদের রোজের ডায়েটে লেবুর খোসকে অন্তর্ভুক্ত করা ছাড়া আর যে কোনও উপায় নেই, তা তো বলাই বাহুল্য!

ক্যানসারের মতো মারণ রোগ দূরে পালায়

লেবুর খোসায় উপস্থিত স্য়ালভেসস্ট্রল কিউ ৪০ এবং লিমোনেন্স নামে দুটি উপাদান ক্যানসার সেলের ধ্বংসে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে নিয়মিত লেবুর খোসা খেলে শরীরের ভিতরে ক্যানসার সেলের জন্ম নেওয়ার কোনও সম্ভাবনাই থাকে না। এখানেই শেষ নয়, লেবুর খোসা খাওয়া মাত্র ব্যাকটেরিয়াল এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশেনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।

মুখ গহ্বরের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে

ভিটামিন সি-এর ঘাটতি হলে মুখ গহ্বর সংক্রান্ত একাধিক রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। তাই তো নিয়মিত লেবুর খোসা খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এতে উপস্থিত ভিটামিন সি এবং সাইট্রিক অ্যাসিড মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, জিঞ্জিভাইটিস সহ একাধিক রোগের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

সারা শরীরে রক্তের প্রবাহে উন্নতি ঘটে

লেবুর খোসা খাওয়া মাত্র শরীরের ভিতরে এমন কিছু রদবদল হতে শুরু করে যে সারা শরীরে রক্তের সরবারহ বাড়তে শুরু করে। ফলে দেহের প্রতিটি কোনায় অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে যাওয়ার কারণে সার্বিকভাবে শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়তে সময় লাগে না। ফলে ছোট-বড় সব ধরনের রোগই দূরে পালায়। দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে

পেকটিন নামে একটি উপাদান প্রচুর মাত্রায় থাকায় লেবুর খোসা নিয়মিত খেলে ওজন কমার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। কারণ এই উপাদানটি শরীরে উপস্থিত অতিরিক্ত চর্বিকে ঝড়িয়ে ফেলতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে।

হার্টের ক্ষমতা বাড়ে

লেবুর খোসায় উপস্থিত পলিফেনল নামে একটি উপাদান শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। অন্যদিকে লেবুর পটাশিয়াম ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণা রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের রাগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। তাই তো যাদের পরিবারে কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্টের রোগের ইতিহাস রয়েছে তারা প্রতিদিনের ডায়েটে লেবুর খোসাকে অন্তর্ভুক্ত করুন। দেখবেন উপকার পাবেন।

লিভারে ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত লেবুর খোসা খাওয়া শুরু করলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ এত মাত্রায় বেড়ে যায় যে লিভারের ভিতরে জমে থাকা টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে শরীরে এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটির কর্মক্ষমতা বাড়তে সময় লাগে না।

হাড় শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে

প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম থাকার কারণে লেবুর খোসা খাওয়া শুরু করলে ধীরে ধীরে হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ইনফ্লেমেটরি পলিআর্থ্রাইটিস, অস্টিওপরোসিস এবং রিউমাটয়েড আথ্রাইটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।

ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়

একাধিক কেস স্টাডিতে দেখা গেছে, লেবুর খোসার ভিতরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের নিচে জমে থাকা টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের বয়স কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে বলিরেখা যেমন কমে, তেমনি ত্বক টানটান হয়ে ওঠে। এই কারণেই তো বয়স ৩০-এর কোটা পরলেই প্রতিদিন লেবুর খোসা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে

ফাইবার সমৃদ্ধ যে কোনও খাবার হজম ক্ষমতার উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর এই উপাদানটি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে লেবুর খেসায়। তাই তো বদ-হজন থেকে গ্যাস-অম্বল, যে কোনও ধরনের হজম সংক্রান্ত সমস্যায় এই প্রকৃতিক উপাদানটি দারুন উপকারে আসে।

স্ট্রেসের মাত্রা কমে

লেবুর খোসায় উপস্থিত সাইট্রাস বায়ো-ফ্লেভোনয়েড শরীরের ভিতরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমতে শুরু করে। ফলে সার্বিকভাবে মন, মস্তিষ্ক এবং শরীর একেবারে চাঙ্গা হয়ে ওঠে। তাই তো এবার থেকে যখনই দেখবেন শরীর আর চলছে না, তখন অল্প করে লেবুর খেসা নিয়ে চটজলদি খেয়ে ফেলবেন। দেখবেন উপকার মিলবে।

লেবুর খোসার গুণ জানলে আর ফেলবেন না

লেবু আমাদের স্বাস্থ্যের অনেক উপকারে আসে। তাই অনেকেই বাসাবাড়িতে নিয়মিত রাখেন লেবু। কিন্তু লেবুর রসের চেয়ে খোসা আরো বেশি কার্যকর। বেশ কিছু গবেষণার দেখা গেছে, লেবুতে যে পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে, তার থেকে প্রায় ৫-১০ গুণ বেশি ভিটামিন রয়েছে লেবুর খোসায়। সেই সঙ্গে আরো রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, ফলেট, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম। যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লেবুর খোসার মধ্যে রয়েছে নিউট্রিয়েন্টস, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপকারী। এ ছাড়াও লেবুর খোসার মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা জটিল রোগব্যাধি প্রতিরোধ করে থাকে।

রক্তচাপ ও হার্টের উপকার

লেবুর খোসা খাওয়া হার্টের জন্য ভালো। লেবুর খোসা বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রাকে কমায়। এর মধ্যে পটাশিয়াম থাকার কারণে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতেও সাহায্য করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর

লেবুর খোসায় উপস্থিত ডায়াটারি ফাইবার শরীরে প্রবেশ করা মাত্র এমন কিছু পরির্বতন আসে যে, কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে আলসার এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যাও কমে যায়।

হজমে সহায়তা

লেবুর খোসার মধ্যে উপস্থিত ফাইবার বা আঁশ অন্ত্রকে পরিষ্কার রাখে এবং বাউয়েল মুভমেন্ট ভালো করে। এটি হজমে সাহায্য করে এবং পেট ফোলাভাব রোধেও সহায়তা করে।

ক্যান্সার দূরে রাখে

লেবুর খোসায় উপস্থিত সয়ালভেসস্ট্রল কিউ ৪০ এবং লিমোনেন্স নামে দুটি উপাদান ক্যান্সার সেলের ধ্বংসে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে নিয়মিত লেবুর খোসা খেলে শরীরের অন্দরে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেয়ার কোনো সম্ভাবনাই থাকে না। এখানেই শেষ নয়, লেবুর খোসা খাওয়া মাত্র ব্যাকটেরিয়াল এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশেনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।


Discover more from Health Bangla

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Leave a Reply

error: Content is protected !!

Discover more from Health Bangla

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading