আনারস

আনারসের পুষ্টিগুণ

আনারস এক প্রকারের ফল। এর অন্যান্য নাম – Pineapple, Anannas, Ananus, Bahunetraphalam, Anamnasam । এর বৈজ্ঞানিক নামঃ Ananas comosus (L.) Merr.

আনারসের গুণাবলী জানার আগে আসুন আনারসের জন্ম পরিচয়টা জেনে নেই। প্রকৃতি বিজ্ঞানীদের মতে, সুদূর ব্রাজিল আনারসের জন্মভূমি। পরের গন্তব্য ছিল ইউরোপে। ক্রিষ্টোফার কলম্বাসের হাত ধরে ইউরোপে এসেছিল আনারস। সেখান থেকে পাড়ি দেয় আমাদের এশিয়ার দিকে। এবং নিজ গুনেই আনারস দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

আনারস

এক গবেষনায় দেখা গেছে আনারসের মধ্যে আছে এক ধরনের এ্যানজাইম। যা কাজ করে প্রদাহ নাশক হিসেবে। আছে প্রচুর ভিটামিন আর মিনারেল। সর্দি, কাশি ও গলা ব্যথায় আনারস এক মোক্ষম অস্ত্র। জ্বরেরও খুব ভালো ওষুধ আনারস। আর আনারস হজমেও সাহায্য করে বৈকি। কিনতে হবে কিন্তু পাকা দেখে আনারস। পাকা আনারস শরীরের জন্য খুব ভালো। সতেজ আনারস দেহের জন্য উপকারী।

আনারসের পুষ্টিগুণ

সারা বিশ্বে জনপ্রিয় ফলগুলোর একটি আনারস। ফলটি সুস্বাদু, রসালো, তৃপ্তিকর এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর। রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং পটাশিয়াম। আঁশ ও ক্যালোরিযুক্ত কোলেস্টেরল ও চর্বিমুক্ত ফলটির স্বাস্থ্য সুরায় জুড়ি নেই। ভিটামিন সি ভাইরাস প্রতিরোধ করে এবং গলা থেকে কফ দূর করে। ঠাণ্ডা ইনফেকশন হয়ে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলেও আনারস খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

খনিজপদার্থ হাড়কে মজবুত করে। এক কাপ আনারসের রসে পুরো শরীরের খনিজপদার্থের ৭৩ শতাংশ পর্যন্ত পূরণ করতে পারে। দাঁতের মাড়ি নিয়ে যারা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত তারা নিয়মিত আনারস খেলে দাঁতের মাড়ি সুস্থ ও মজবুত হয়। গরম-ঠাণ্ডার জ্বর, জ্বরজ্বর ভাব দূর করে এই ফল। এতে রয়েছে ব্যথা দূরকারী উপাদান। তাই শরীরের ব্যথা দূর করার জন্য এর অবদান গুরুত্বপূর্ণ।

আনারস কৃমিনাশক। কৃমি দূর করার জন্য খালি পেটে (সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠে) আনারস খাওয়া উচিত। আনারস শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। ফলে শিরা-ধমনির (রক্তবাহী নালি) দেয়ালে রক্ত না জমার জন্য সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত যেতে পারে। হৃৎপিণ্ড আমাদের শরীরে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত সরবরাহ করে। আনারস রক্ত পরিষ্কার করে হৃৎপিণ্ডকে কাজ করতে সাহায্য করে এবং দেহের তৈলাক্ত ত্বক, ব্রণসহ সব রূপলাবণ্যে আনারসের যথেষ্ট কদর রয়েছে।

আনারস-দুধ একসঙ্গে খেলে কি হয়?

সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা ধারণা রয়েছে আনারস এবং দুধ একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। এতে শারীরিক সমস্যা হয়। বিশেষ করে মায়েরা তাদের সন্তানকে কখনই দুধ এবং আনারস খেতে দেন না। এমনকি লেবুও দুধ একসঙ্গে দেওয়া হয় না। এসব ধারণার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেক বাড়িতে ও হোটেলে বিভিন্ন ফল দিয়ে যেসব ডেজার্ট তৈরি হয় তাতে মওসুমি ফল হিসেবে আনারস থাকে। একই সঙ্গে রাখা হয় দুধে তৈরি নানা উপাদেয় খাবার। দুগ্ধজাত খাবার এবং আনারস একসঙ্গে আহারে যদি অসুবিধা না হয় তাহলে দুধ ও আনারস একসঙ্গে খেলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। প্রকৃতপক্ষে এটি এক ধরনের কুসংস্কার। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।


Discover more from Health Bangla

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Health Bangla
error: Content is protected !!