কিডনিতে পাথর বা রেনাল স্টোন হলে অনেক ক্ষেত্রে আগে থেকে বোঝা যায় না। অনেক সময় কোমরের দুই পাশে হালকা ব্যথা অনুভূত হয়। জেনে নিন কি লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবেন আপনার কিডনিতে পাথর আছে।
কেমিক্যালযুক্ত খাবার, দূষণ আর কিছু বদঅভ্যাসের কারণে আজকাল কিডনি রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। তবে আগে থেকে সতর্ক হলে কিডনি রোগ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভালো হয়ে যায়। শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পানি পান, মূত্রজনিত কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখা কিংবা তলপেটে বা কোমরে একটানা ব্যথা থাকলে তা নিয়ে সতর্ক থাকা- সাধারণত এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখলেই কিডনি রোগ শুরুতেই থামানো সম্ভব।
কিডনির অন্যতম রোগ রেনাল স্টোনে আক্রান্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা কম নয়। আধুনিক জীবনযাপন, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি রেনাল স্টোনের অন্যতম কারণ।
নেফ্রোলজিস্ট অভিজিৎ তরফদারের মতে, ‘কিডনিতে পাথর কয়টি আছে এবং কোথায়, কেমন অবস্থায় রয়েছে তার উপরই রেনাল স্টোনের উপসর্গ নির্ভর করে। পাথর নানা আকারের হয়। সাধারণত পাথরের সংখ্যা কম ও আকার খুব ছোট হলে তা কোনো রকম উপসর্গ ছাড়াই শরীরে থেকে যেতে পারে। ওষুধের মাধ্যমে তা গলিয়ে দেওয়া বা শরীরের বাইরে বের করে দেওয়ার চেষ্টাও করা হয়। কিন্তু সংখ্যায় বেশি বা আকারে বড় হলে তা কিছু লক্ষণ প্রকাশ করে। তখন অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ে।’
দেখে নিন
কিডনিতে পাথর হলে কি লক্ষণ দেখা যায় জেনে নিন
এই অসুখ শরীরে বাসা বাঁধলেও অনেকেই প্রথম অবস্থায় বুঝে উঠতে পারেন না। সাধারণত, কিডনির জটিলতার নানা উপসর্গই এই রোগের ক্ষেত্রেও লক্ষণ হিসাবে দেখা দেয়। দেখে নিন উপসর্গগুলো :
► অনেকেরই এই অসুখের হাত ধরে ঘন ঘন জ্বর আসে। তাপমাত্রা অল্প থাকলেও বার বার ঘুরেফিরে এমন জ্বর এলে সাবধান হোন।
► মূত্রের রঙের দিকে খেয়াল রাখুন। যদি লালচে রঙের প্রস্রাব হয়, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কিডনির অন্যান্য জটিলতাতেও প্রস্রাবের রং লালচে হতে পারে।
► কোমর থেকে তলপেটে ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই ব্যথা যে সকলের ক্ষেত্রে স্থায়ী হবে এমন নয়। তাই মাঝে মাঝে এমন ব্যথা হলেও সতর্ক হোন।
► বমি হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়। বমিভাবও থাকে অনেকের।
এসব লক্ষণ দেখলে রেনাল স্টোন ও কিডনির যে কোনো জটিলতা বোঝার জন্য নির্দিষ্ট পরীক্ষাগুলো করিয়ে নিন ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতে, কিছু বিশেষ নিয় মেনে চললে রেনাল স্টোনের সমস্যা এড়ানো সম্ভব। তবে দেখে নিন সেই নিয়মগুলো :
► পানি খেতে হবে, কিন্তু প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া কোনো স্বাস্থ্যকর লক্ষণ নয়। বরং শরীরের প্রয়োজন বুঝে, চাহিদা জেনে সেই অনুযায়ী পানি খান। এতে কিডনি ভালো খাকবে।
► এমন কোনো ডায়েটের উপর নির্ভর করবেন না, যেখানে ক্যালশিয়ামের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার থাকে। অতিরিক্ত দুধ বা দুগ্ধজাত দ্রব্য গ্রহণে রেনাল স্টোনের সম্ভাবনা বাড়ে।
► প্রায়ই কি মূত্রথলিতে বা প্রস্রাবে ইনফেকশন হয়? তা হলে প্রথম থেকে সতর্ক হয়ে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান।