হৃৎপিণ্ডে ৭০ শতাংশের বেশি ব্লক হলে তা মেডিকেল থেরাপি (ওষুধ) নেয়া হলে সুস্থ থাকা যায়। ৭০ শতাংশের বেশি ব্লক হলে এনজিও প্লাস্টি বা স্ট্যান্টিং করতে হবে এবং হার্টের আর্টারি পুরোপুরি ব্লক হয়ে গেলে বাইপাস সার্জারি করতে হবে। সুস্থ থাকতে হলে উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে রাখতে হবে। ভারতীয় উপমাহদেশের মানুষ চীনাদের তুলনায় ছয় গুণ এবং জাপানিদের তুলনায় ২০ গুণ বেশি হৃদরোগের ঝুঁকিতে পড়ে। এর কারণ এ অঞ্চলের মানুষ খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে তেমন সচেতন নয়। ফলে আমরা সহজেই হৃদরোগ ছাড়াও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছি।

হৃদরোগবিষয়ক বক্তৃতায় ভারতের দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ এ্যাপোলো হাসপাতালের কার্ডিওভাসু্কলার ও কার্ডিওথোরাসিক সার্জারির সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মুকেশ গোয়েল এসব তথ্য জানান। গত ২৩শে জুলাই ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী সেন্টারে ভারতে চিকিৎসা সেবা সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কেয়ারিং ইন্ডিয়া হেলথবিষয়ক এই সেমিনারের আয়োজন করে।
সুস্থ থাকতে হলে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে হবে
সেমিনারে আরো ক্যানসার-বিষয়ক বক্তব্য রাখেন একই হাসপাতালের আরেক সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. ফিরোজ পাশা, ইউরোলজি-বিষয়ক এ্যাপোলোর সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. এন সুব্রামানিয়ান, প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শাহনুল হাসান খান। ডা. মুকেশ গোয়েল আরো বলেন, ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়স সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
এ সময় মানুষের মধ্যে উচ্চ কোলেস্টেরল, স্থূলতা, ধূমপান, মানসিক চাপ (স্ট্রেস) এবং উচ্চ রক্তচাপ (হাইপারটেনশন) দেখা দেয়।
স্ট্রেস কমাতে যে ওয়ার্ক আউট করতে পারেন – Stress Relieving Exercise
আমরা বেশি পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট (ভাত) খেয়ে থাকি। এর তুলনায় প্রোটিন গ্রহণ করি একেবারে কম। ফলে আমরা স্থূল হয়ে যাচ্ছি। আমরা শারীরিক পরিশ্রমও কম করি। এ অঞ্চলে এত বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে বিশ্বের ‘ডায়াবেটিসের রাজধানী’ বলা হয়ে থাকে। ডা. মুকেশ জানান, খাবার খাওয়ার আগে আমাদের দেখতে হবে আমরা কী খাচ্ছি। খাদ্য তালিকায় ভাত, রুটি কম রাখতে হবে। তেল অথবা ঘি দৈনিক জনপ্রতি দুই চা চামচের বেশি খাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, সব ধরনের রান্নার তেল একই রকম। ‘কোনো তেলে কোলেস্টেরল কম, কোনোটায় বেশি’ এমন নয়।
তিনি জানান, রান্না করা পোড়া তেল কখনোই পুনরায় ব্যবহার করা যাবে না। লাল রঙের গোশত পরিহার করতে হবে সুস্থ থাকতে চাইলে। সুস্থ থাকতে চাইলে দৈনিক ৪০ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে। সাইকেল চালালে দৈনিক কমপক্ষে চার কিলোমিটার চালাতে হবে। এ ছাড়া এখানকার মানুষের ধূমপানের পরিমাণ অনেক বেশি। অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ধূমপায়ীর সংখ্যা চার গুণ বেশি।
ড. মুকেশ বলেন, মেডিকেল থেরাপি, এনজিওপ্লাস্টি বা স্ট্যান্টিং এবং বাইপাস সার্জারির মাধ্যমে হৃদরোগে সুস্থ থাকা যায়। স্ট্রেস কমিয়ে রাখার জন্য যোগব্যায়াম, মেডিটেশন (ধ্যান) করা যেতে পারে। তাছাড়া স্ট্রেস কমিয়ে রাখার জন্য পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সহায়তা নিতে হবে।
Discover more from Health Bangla
Subscribe to get the latest posts sent to your email.