Male-Infertility

বাচ্চা হচ্ছে না? জেনে নিন আপনার স্বামীর সমস্যা কিনা?

আমাদের সমাজে এমন অনেকেই আছেন যারা অনেক চেষ্টা করার পরও বাচ্চা নিতে পারছেন না। জেনে নিন আপনার স্বামী বাচ্চা না হওয়ার জন্য দায়ী কি না?

কিন্তু সমাজ থেকে শুধুমাত্র মেয়েটিকেই দায়ী করা হয়। আমাদের চারপাশে অনেক দম্পতিকেই প্রতিনিয়ত তীব্র আকাক্সক্ষা নিয়ে ছুটোছুটি করতে দেখি- একটি সন্তানের আশায়। অনেককেই শেষ পর্যন্ত হতাশ-ই হতে হয়; কেউ কেউ সফল হন। প্রথাগতভাবে সন্তান না হবার জন্য নারীকেই দায়ী করা হলেও এতে পুরুষ সঙ্গীর ভূমিকাও অনেক সময় প্রধান নিয়ামক হয়ে দাঁড়ায়। প্রায় ৪০-৫০% ক্ষেত্রে পুরুষদের সমস্যার কারণে বন্ধ্যাত্ব দেখা দেয়, যা মোট পুরুষ জনসংখ্যার ৭% এর মত দাঁড়ায়।

Male-Infertility

যে সকল কারণে পুরুষদের সন্তান না হবার ঝুঁকি তৈরী হয় তা এখানে আলোচনা করা হলো

পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের মূল কারণ হলো পর্যাপ্ত মান সম্পন্ন শুক্রাণু তৈরীতে ব্যর্থতা। এর কারণগুলো নিম্নরূপ হতে পারেঃ

ক) ৩০%-৪০% ক্ষেত্রে শুক্রাশয়ের ত্রুটি থাকে।
খ) ১০%-২০% ক্ষেত্রে শুক্রাণু বেরোনোর পথে প্রতিবন্ধকতা থাকে।
গ) ১%-৫% ক্ষেত্রে পিটুইটারী বা হাইপোথ্যালামাসে সমস্যা থাকে।
ঘ) ৪০%-৫০% ক্ষেত্রে কোন সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে না-ও পাওয়া যেতে পারে।

 

পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব সণাক্তকরণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো রুগীর পরিপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা। এক্ষেত্রে অন্য অনেকগুলো শারীরিক সমস্যা সংযুক্ত থাকতে পারে। পরিবেশের নানাবিধ বিষাক্ত পদার্থও এর পেছনে থাকতে পারে। ধূমপান সব সময়ই বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরী করে।
শুক্রাশয় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া (ভ্যারিকোসিল, টরশন, ইনফেকশন)

দেখে নিন অণ্ডকোষ এর রোগগুলো

জেনেটিক/ক্রোমোজমাল সমস্যা- ক্লিনফেল্টার সিনড্রোম

যাদের ডায়াবেটিস আছে, বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ভালো নয় তাদেরও এ সমস্যা হতে পারে। যাদের কোন সন্তান নেই তাদের ক্ষেত্রে যেমন, তেমনি যারা এক বা একাধিক বার বাবা হবার পরেও এখন সন্তান নিতে ব্যর্থ হচ্ছেন, তাদের জন্যও এ পরীক্ষাটি করা প্রয়োজন হবে। Semen Analysis হতে শুক্রাণুর সংখ্যা, আকৃতি, চলৎ ক্ষমতা ইত্যাদিরও ধারণা পাওয়া যেতে পারে।

কিছুকিছু ক্ষেত্রে অন্যান্য রোগের পরীক্ষাও পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসার কারণের উপর নির্ভর করে। আবার স্ত্রীর বন্ধ্যাত্বের কোন কারণ আছে কিনা, তাও বিবেচনায় নিতে হবে। সে জন্য সব সময়ই উভয় পার্টনারকে একই সাথে চিকিৎসার আওতায় আনা হয়।

অনেক রোগীর শুক্রাণু চলাচলের নালীটি বন্ধ থাকে এবং বন্ধ্যাত্ব হয়। আগের কোন ইনফেকশন বা আঘাতের কারণে এমনটি হতে পারে। খুব কম ক্ষেত্রেই জন্মগত ভাবে এ নালীটি অসম্পূর্ণ বা অনুপস্থিত থাকতে পারে। এ সমস্যাগুলোতে অপারেশন করে নালীর শুক্রাণু প্রবাহমানতা অনেকটাই স্বাভাবিক করা যেতে পারে।

কারো কারো ক্ষেত্রে আগে ভ্যাসেকটমি করাছিল, তা আবার পুনঃসংযুক্ত করে পুরুষটিকে প্রজননক্ষম করা যেতে পারে।

মস্তিষ্কের নিচের দিকে অবস্থিত পিটুইটারী ও হাইপোথ্যালামাস শুক্রাশয় থেকে টেস্টোস্টেরণ নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে। যদি কোন কারণে ঐ গ্রন্থি দুটির কার্যকারিতা কম থাকে তবে হরমোন ইনজেকশন দিয়ে এটির কার্যকারিতা বাড়ানো যাবে।

ভ্যারিকোসিস থাকলে সেক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় অপারেশন করে ভলো ফল পাওয়া যেতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে কৃত্রিম গর্ভধারণ পদ্ধতির সহায়তা নিতে হতে পারে।

জিনগত বা ক্রোমোজমাল ভ্রুণে (ক্লিনেফেলটারসিনড্রোম) থাকলে উন্নতির সম্ভাবনা নেই। অন্য কোন কারণে শুক্রাশয়ের ফেইলিওর হলে (যেমন: আঘাতজণিত কারণে শুক্রাশয়ের ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া, প্যাঁচ পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া ইত্যাদি কারণেও শুক্রাশয়ের স্থায়ী ও অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে)। শুক্রাণুর সংখ্যা, আকার ও চলৎ ক্ষমতার ত্রুটি থাকলে সীমিত পর্যায়ে ভালো ফলাফল আশা করা যেতে পারে।

দেখে নিন পুরুষের বীর্যের মান উন্নত করে যে খাবারগুলো

প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে সন্তান ধারণ করতে ব্যর্থ হলে কৃত্রিম অনেকগুলো পদ্ধতির আশ্রয় নেয়া যেতে পারে। এ সকল পদ্ধতিতে দম্পতির বয়স, পদ্ধতির ধরণ, অনেক সময় সেবাদানকারী কেন্দ্রের দক্ষতার উপরেও ফলাফল বিভিন্ন রকম হতে পারে।

ডাঃ শাহজাদা সেলিম

ফোনঃ ০১৯১২-৬১৩৩৭৪

সহকারী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Health Bangla
Exit mobile version