শীতে প্রকৃতি হয়ে পড়ে রুক্ষ্ম। কিন্তু এই রুক্ষ তার সাথে পাল্লা দিয়ে নষ্ট হতে থাকে আমাদের ত্বক। সমস্যা হলো সব ধরনের ত্বক কিন্তু এক ধরনের নয়। সেজন্য একেক ধরনের ত্বকে এর প্রভাব পড়ে একেক রকম। ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে আপনি আপনার ত্বকে কি ব্যবহার করবেন তা নির্ভর করে আপনার ত্বকের প্রকৃতির ওপর। আজ আমরা আপনাদের জানাবো কোন ধরনের ত্বকের জন্য শীতে আপনাকে কিভাবে যত্ন নিতে হবে।
শীতের রুক্ষ হাওয়ায় ত্বক হারায় আর্দ্রতা।
শীতে ত্বকের যত্নে এ বিষয়গুলো মানছেন তো? দেখে নিন
শীতের শুষ্কতায় ত্বক রুক্ষ, শুষ্ক ও প্রাণহীন হয়ে ওঠে। এই ঋতুতে ত্বক কোমল ও সুরক্ষিত রাখতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা জরুরি। শীতে ত্বক ফাটা, চুলকানি, বলিরেখা, মৃতকোষ হওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যাদের ত্বক তৈলাক্ত মুখ ধোয়ার পর তাদের ত্বকে দেখা যায় শুষ্ক টান টান ভাব। ত্বকের স্বাভাবিক লাবণ্য নষ্ট হয়ে ত্বক নিস্তেজ হয়ে পড়ে। স্বাভাবিক ত্বকও এ সময় লাবণ্যতা হারায়।

ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে ময়েশ্চার ধরে রাখতে হবে ত্বকে। কারণ ময়েশ্চারাইজার ত্বকের বাইরের অংশের পানি ও আর্দ্রতা ধরে রাখে। ময়েশ্চারাইজার শুধু ত্বকের আর্দ্রতাই ধরে রাখে না, ত্বক কোমল ও উজ্জ্বল রাখে। সারা বছরই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা প্রয়োজন। তবে শীতে এর প্রয়োজনীয়তা একটু বেশিই।
কোন ত্বকে কেমন যত্ন চাই?
শুষ্ক ত্বক
যাদের ত্বক শুষ্ক তারা বাইরে থেকে ফিরে ক্লিনজিং লোশন কিংবা ক্রিমি ক্লিনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করুন। এর পর ওমেগা ফ্যাটি এসিড অ্যান্টি অক্সিডেন্টযুক্ত মিল্কি টোনার ব্যবহার করুন। গোসল বা হাত-মুখ ধোয়ার পর গ্লিসারিনের সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। এটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজারের কাজ করবে। বাজারের কেনা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে চাইলে বাদাম তেলসমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ১ টেবিল চামচ দুধের সরের সঙ্গে আধা চা চামচ মধু মিশিয়ে মুখের ত্বকে ব্যবহার করুন। ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল থাকবে।
শীত আসছে, ত্বকের যত্ন কিভাবে নিবেন জেনে নিন
তৈলাক্ত ত্বক
যাদের তৈলাক্ত ত্বক তাদের ময়েশ্চারাইজারসমৃদ্ধ লোশন ব্যবহার করা প্রয়োজন। এ সময় তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেছে নিন অয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার। প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে গোসলের আগে অলিভ অয়েলের সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করুন। ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। মধু, লেবুর রস ও বেকিং সোডার মিশ্রিত ফেসপ্যাক দিয়ে মুখের ত্বক স্ক্রাব করুন। ত্বকের মরা চামড়া উঠে ত্বক পরিষ্কার, উজ্জ্বল ও আর্দ্র থাকবে।
স্বাভাবিক ত্বক
হায়ালুরনিক এসিডযুক্ত ময়েশ্চারাইজার স্বাভাবিক ত্বকের জন্য উপকারী। হায়ালুরনিক এসিডযুক্ত ফেস সেরামও স্বাভাবিক ত্বকের ময়েশ্চারাইজার বজায় রাখে। দেবে বাড়তি জেল্লা। রাতে ঘুমানোর আগে ভিটামিন ‘বি’, ‘সি’ এবং ‘ই’সমৃদ্ধ ক্রিম ব্যবহার করুন। ত্বক নরম ও কোমল থাকবে। একটি পাকা কলা চটকে তার সঙ্গে সামান্য মধু মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। প্যাকটি ত্বক আর্দ্র, কোমল ও উজ্জ্বল রাখবে।
ভালো মানের লোশন ব্যবহার করুন
শীতে প্রাকৃতিক উপাদানে ত্বকের ময়েশ্চার বজায় রাখা ত্বকের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী। পাশাপাশি ময়েশ্চারাইজারসমৃদ্ধ লোশনও ব্যবহার করুন। শীতের শুরুতে মুখের ত্বক এবং শরীরের জন্য ময়েশ্চারাইজারসমৃদ্ধ ভালোমানের লোশন কিনে নিতে পারেন। গোসল শেষে বা হাত-মুখ ধোয়ার পর ত্বক হালকা মুছে কিছুটা ভেজা থাকা অবস্থাতেই লোশন ব্যবহার করুন। রাতে ঘুমানোর আগেও লোশন ব্যবহার করুন। খুব বেশি পুরনো লোশন ব্যবহার করবেন না। পুরনো লোশন ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। ত্বকের ধরন অনুযায়ী কিনুন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।