corona virus

আক্রান্ত রোগীর রক্তের প্লাজমা দিয়ে করোনা চিকিৎসা সম্ভব

কোভিড-১৯ মহামারিতে রোগীদের অ্যান্টিভাইরাল, ইন্টারফেরন ও অ্যাজমার ওষুধ এমনকি ভেন্টিলেটর দিয়েও শেষ রক্ষা করা যাচ্ছে না। মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে ১ লাখের বেশি মানুষের। এই মৃত্যুকে কীভাবে রোখা যায়, সেই উপায় বের করাই এখন সবার লক্ষ্য।

কোভিড-১৯ চিকিৎসা

কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার পর জ্বর, কাশি ও গলাব্যথা দেখা দেয়। পরে করোনা ভাইরাস শরীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে এবং ফুসফুসকে আক্রমণ করে। আর এই প্রদাহকালীন নানা ধরনের সাইটোকাইন ও ক্যামোকাইন অধিক পরিমাণে নিঃসৃত হয়ে ফুসফুসে সাইটোকাইন আলোড়ন তোলে। তখন রোগী শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারে না। ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। এই পর্যায়ে রোগীর শরীরে প্যাসিভ ইমিউনিটি তৈরি করা সম্ভব হলে এই মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করা সম্ভব হবে। এতে ওষুধ পরীক্ষা করার ঝুঁকি কম, আছে সফলতা।

corona virus

সহজ ভাষায় বললে, যেসব কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছেন তাদের শরীরের রক্তের প্লাজমা গুরুতর আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্রয়োগ করতে হবে। তাহলে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে দ্রুত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে। এতে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসবে রোগী।

১৯১৮ সালে স্প্যানিশ ইনফ্লুয়েঞ্জা-নিউমোনিয়া, পরবর্তীকালে পোলিও, ইবোলা, সার্স এসব ভাইরাসেই কার্যকর চিকিত্সা আবিষ্কারের আগে এই প্যাসিভ ইমিউনো থেরাপি অর্থাৎ কোনভেলিসেন্ট প্লাজমা (যাতে রয়েছে ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করার মতো অ্যান্টিবডি) ব্যবহার করে ফল পাওয়া গেছে। চীনে সম্প্রতি কিছু রোগীর ওপর এই Convalescent Plasma ব্যবহার করার ফলে রোগীরা সুস্থ হয়ে উঠেছে এবং এ নিয়ে আরো গবেষণা চলছে। এই প্রাণঘাতী রোগে বিশেষ করে প্রবীণ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপরে প্রয়োগ করলে মৃত্যুঝুঁকি অনেকাংশে কমবে বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।

Hyper Immune বা Convalescent Plasma Therapy বলতে সদ্য কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত পরবর্তীতে সুস্থ ব্যক্তির রক্তের প্লাজমাকে বোঝায়। এই প্লাজমাতে প্রচুর পরিমাণে নিউট্রালাইজিং অ্যান্টিবডি রয়েছে, যা দ্রুততার সঙ্গে কোভিড-১৯ ভাইরাসকে অকেজো করে দিতে পারে। এজন্য কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হওয়া রোগীর রক্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে। এরপর যেসব রোগীর অবস্থা খারাপের দিকে যাবে, তাদের শরীরে হাইপার ইমিউন প্লাজমা প্রয়োগ করতে হবে। এভাবে চিকিত্সা করলে মৃত্যু যেমন কমে আসবে, তেমনি টিকা বা ওষুধ আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত গুরুতর আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ করার একটি পথ সৃষ্টি হবে।

লেখক

ডা. এম এ খান

অধ্যাপক,

বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেন্টার,

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল


Discover more from Health Bangla

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Leave a Reply

error: Content is protected !!

Discover more from Health Bangla

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading