Kissing-Disease

চুমু খাওয়ার ভাল দিক খারাপ দিক

ভালবাসা, আবেগ ও আদর প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম হলো চুমু বিনিময়। চুমু স্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু ভাল বা মন্দ তা জানা সবার জন্য অতীব জরুরী। চুমুর আদান প্রদানে মুখে লালার প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। চুমু লালার প্রবাহ বাড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে মুখ, মাড়ি এবং দাঁতের স্বাস্থ্য পরোক্ষভাবে ভাল রাখতে সাহায্য করে থাকে। চুমু আমাদের মানসিক চাপ কমিয়ে দেয়। চুমু স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলকে কমিয়ে দেয় এবং ব্রেনে Serotonin এর মাত্রা বা পরিমাণ বৃদ্ধি করে। এছাড়া চুমু Endorphin এর পরিমাণ বৃদ্ধি করে। চুমু আমাদের মুড বা মনের অবস্থার উন্নতি করে থাকে। এন্ডোরফিন প্রাকৃতিকভাবেই ব্যাথা ও স্ট্রেসের বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে।

চুমু খাওয়ার ভাল দিক খারাপ দিক
চুমু খাওয়ার ভাল দিক খারাপ দিক

চুমু খাওয়ার ভাল দিক খারাপ দিক

চুমু চলাকালীন সময়ে অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসরণ হয়ে থাকে। অক্সিটোসিনও স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমিয়ে দিয়ে আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে। চুমুর যেমন ভাল দিক রয়েছে তেমনি ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস যা লালাতে বিদ্যমান যা চুমুর মাধ্যমে একজন থেকে অন্যজনে ছড়িয়ে পড়তে পারে। উপরের শ্বাসনালীর সংক্রমন যেমন ঠান্ডাজণিত সমস্যা সহজেই চুমুর মাধ্যমে বিস্তার লাভ করতে পারে। অনেক ভিন্ন ধরণের ভাইরাস সাধারণ ঠান্ডাজণিত সমস্যার জন্য দায়ী। চুমুর মাধ্যমে Glandular Fever বা জ্বর হতে পারে যা ইনফেকসাজ মনোনিওক্লোসিস নামে পরিচিত। এ রোগ একটি ভাইরাসজণিত সংক্রমণ যার কারণে জ্বর, সোর থ্রোট বা গলায় ক্ষত, লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া, দূর্বলতা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। Glandular Fever,  EBV- Epstein Barr Virus দ্বারা হয়ে থাকে। সংক্রমণের পর এ ভাইরাস মানবদেহে সারাজীবন থেকে যায়। কিন্তু এটি সুপ্তাবস্থায় থাকে। এ ভাইরাসটি ছোঁয়াচে এবং সংক্রমিত হতে পারে। যখন কেউ চুমুর সময় অন্যজনের লালার সংস্পর্শে আসে যিনি সাম্প্রতিক সময়ে সংক্রমিত হয়েছেন।

এ কারণেই Glandular Fever বা Infectious Mononucleosis কে Kissing Disease ও বলা হয়। কোল্ড সোরের ক্ষেত্রে (ঠোটের ভাইরাস সংক্রমণ) হারপিস ভাইরাস চুমুর মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে মুখ, ঠোঁট বা অন্য কোনো অঙ্গে। অতএব, ঠোঁটের কোল্ড সোর যখন কার্যকর অবস্থায় থাকে তখন চুমু থেকে বিরত থাকতে হবে। Meningococcal রোগ যেমন মেনিনজাইটিস ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে ছড়ায়। গভীর চুমুর মাধ্যমে এ ব্যাকটেরিয়া বিস্তার লাভ করতে পারে। পেরিওডন্টাল রোগ লালার মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে অর্থাৎ চুমুর মাধ্যমেও পেরিডন্টাল রোগ বিস্তার লাভ করতে পারে। এ কারণে আমেরিকান একাডেমি অব পেরিওডন্টোলজির অভিমত পরিবারের একজনের পেরিওডন্টাল রোগ থাকলে সবার পরীক্ষা করা উচিত। গভীর চুমু বা ওরাল সেক্সের (Oral Sex) মাধ্যমে হিউম্যান প্যাপিওলোমা ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। হিউম্যান প্যাপিওলোমা ভাইরাসের সাথে ওরাল ক্যান্সারের যোগসূত্র রয়েছে। তাই প্যাপিওলোমা ভাইরাসের দীর্ঘ মেয়াদী সংক্রমণ মুখের অভ্যন্তরে ক্যান্সার পর্যন্ত সৃষ্টি করতে পারে। তাই চুমু হতে হবে স্বাস্থ্যবান মুখের চুমু। আপনার মুখে বা ঠোঁটে কোনো রোগ থাকলে কোনো শিশুকেও আদর করার জন্য চুমু খাওয়া আপনার জন্য ঠিক হবে না। কারণ আপনি শিশুটিকে চুমু খাওয়ার অর্থ হলো শিশুকে যে কোনো একটি রোগে সংক্রমিত করা। তাই আমাদের সবার চুমুর আদান প্রদানে সতর্ক হওয়া উচিত ।

mastercard

ডাঃ মোঃ ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ

1 thought on “চুমু খাওয়ার ভাল দিক খারাপ দিক”

Leave a Reply

error: Content is protected !!